সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:০০ অপরাহ্ন
বশির আহমেদ, বান্দরবান প্রতিনিধি::
বালাঘাটার পুলপাড়ায় নতুন নির্মিত ব্রীজের গাইড ওয়াল ও রাস্তায় ফাটল দেখা দিয়েছে। নতুন নির্মিত এই ব্রীজটি চলতি মাসেই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রীর উদ্বোধনের কথা ছিল।
উদ্বোধনের আগেই এমন পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় মানুষের মনে দেখা দিয়েছে সংশয়। ব্রীজটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এটি ভিত্তি দেওয়া হয় ২০১৭ সালের ২৬ মে।
এদিকে, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদী ও পাহাড়ি ঢলের পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও মানুষের দুর্ভোগ চরমে। অফিস, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, বাসাবাড়ি পানিতে ডুবে যাওয়ায় কাদা জমে গেছে। কয়েকটি অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকের ক্ষেত ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। আন্ত:উপজেলা সড়ক, বান্দরবান-কেরানিহাট ও বান্দরবান-চন্দ্রঘোনা সড়কে কয়েকটি জায়গা ভেঙ্গে গেছে। সড়ক থেকে পানি নেমে গেলেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে উঠেনি। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে আরো একদিন লাগতে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি কমতে শুরু করায় বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছে লোকজন। তবে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী লোকজন এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে। পানি কমে যাওয়ার পরও বাড়ির ভেতরে কাদামাটি জমে যাওয়াতে আরেক চরম দুর্ভোগে পড়েছে লোকজন। হঠাৎ বন্যার পানি বেড়ে যাওয়াতে অনেকে বাড়ি থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরাতে না পারায় বেশিরভাগ ইলেক্ট্রনিক জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সজীব আহমেদ জানান, বন্যায় পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়াতে গাইড ওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে ব্রীজের কোনো ক্ষতি হবে না। বন্যার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই নতুনভাবে মেরামত করা হবে। ঠিকাদার অমল কান্তি দাশ জানান, কাজে কোনো সমস্যা নেই। বান্দরবানে কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বৃষ্টিতে বন্যার পানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়াতে এমন ক্ষতি হয়েছে।
গত ৬ জুলাই থেকে টানা ভারী বৃষ্টিতে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আছে। গত রোববার থেকে বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় বন্যার পানি কমতে শুরু করে। বান্দরবান সদরের পৌর এলাকার ইসলামপুর, বালাঘাটা, পুলপাড়া, নোয়াপাড়া, উজানীপাড়া, মেম্বারপাড়াসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চলের বন্যার পানি নামতে শুরু করায় জনজীবনে স্বস্তি নেমে এসেছে। এদিকে জেলা সদরের পাশাপাশি লামা, থানচি ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে বন্যার পানি কিছুটা কমলেও দুর্ভোগ কমেনি অনেকের।
এদিকে টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে আতংকিত অনেক পরিবার নিরাপদে অবস্থানের জন্য জেলার ১৩১টি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে। জেলা প্রশাসন, পৌরসভা, রেডক্রিসেন্ট ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত পরিবারগুলোকে বিভিন্ন ধরনের ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। সামনে আরো ভারী বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের বাড়িতে ফিরে যেতে এক ধরণের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম জানান, জেলায় ত্রাণ সামগ্রী যতেষ্ট পরিমাণ মজুদ রয়েছে। ত্রাণের জন্য কোনো সমস্যা নেই। জেলায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন দফতর থেকে রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে।